রাশিয়ার হয়ে গোয়েন্দাগিরি ও গুপ্তহত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের সামরিক প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তার ৪০ বছর বয়সী রস ডেভিড কাটমোর নামের ওই ব্যক্তি স্কটল্যান্ডের ডানফার্মলাইন শহরের বাসিন্দা। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের দাবি, রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে নিশানাভিত্তিক হত্যাকাণ্ড চালানোর’ জন্য কাটমোরকে নিয়োগ করেছিল।
কিয়েভ প্রসিকিউটরের দপ্তর জানিয়েছে, ‘২০২৪ সালের মে মাসে কাটমোর ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলোর অবস্থানের কো-অর্ডিনেট, প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ছবি এবং সামরিক সদস্যদের শনাক্ত করা যায়, এমন তথ্য পাচার করেছিলেন।’
প্রসিকিউটর দপ্তর আরও জানায়, ‘কাটমোরের যোগাযোগের বিশদ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি রুশ বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার স্বার্থে অন্যান্য কাজও করেছিলেন।’
কাটমোর এর আগে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের শুরুতে তিনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও পরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে প্রশিক্ষণে সহায়তা দিতে ওই দেশে যান।
যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’ বলছে, ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের তদন্তে কাটমোরই প্রধান সন্দেহভাজন। তাদের দাবি, দক্ষিণ ইউক্রেনের ওডেসায় রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাঁকে নিয়োগ দেন। ইউক্রেনের সামরিক ইউনিটের অবস্থান–সংক্রান্ত গোপন তথ্য সরবরাহের জন্য তাঁকে ছয় হাজার ডলার দেওয়ার কথা ছিল। দোষী সাব্যস্ত হলে কাটমোরের সর্বোচ্চ ১২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
কাটমোর বিভিন্ন রুশপন্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গ্রুপে ‘সেবা দেওয়ার প্রস্তাব’ দিয়ে পোস্ট করার পর এফএসবি কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, কাটমোরকে বিস্ফোরক তৈরির নির্দেশনা পাঠানো হয় এবং তাঁকে একটি গোপন স্থানও দেওয়া হয়, যেখান থেকে তিনি একটি পিস্তল সংগ্রহ করেন।
ইউক্রেনের গণমাধ্যম বলছে, ইউক্রেনীয় কর্মী দেমিয়ান হানুল, ইরিনা ফারিওন এবং পার্লামেন্ট সদস্য আন্দ্রি পারুবিইকে হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করার সন্দেহভাজন ব্যক্তির তালিকায় রয়েছেন কাটমোর। এই তিনজনই আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন।
২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে হাজারো মানুষ ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আহ্বানে সাড়া দিয়ে অভিজ্ঞ বিদেশি সেনারাও দেশটিকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র এ বিষয়ে বলেছেন, ‘ইউক্রেনে আটক যুক্তরাজ্যের এক নাগরিককে আমরা কনস্যুলার সহায়তা দিচ্ছি। আমরা ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি।’