ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করা হলে সংঘাতের শেষ হবে ও পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানো যাবে।’
কয়েক দিন আগে ইরানে গুপ্ত হামলা চালিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পরিকল্পনা আটক দেন—রোববার দুজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছিল।
গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা চালিয়ে দেশটির সেনাপ্রধান, অভিজাত ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের প্রধানসহ অন্তত ২০ জন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। সেদিন হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।
আমার মনে হয়, রাজত্ব রক্ষা করাই তাঁর (আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি) এক নম্বর লক্ষ্য। তাই রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে যদি তাঁকে কিছু ছাড়ও দিতে হয়…যেমন, যাদের তিনি শয়তান বলে বর্ণনা করেন, সেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যদি আলোচনায় বসতে হয়, তিনি সেটা করতে প্রস্তুত থাকবেন বলে আমার মনে হয়।
জেফ্রি ফেল্ডম্যান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানও ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে চলছে পাল্টাপাল্টি হামলা। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের দীর্ঘদিনের শাসক আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন এবং তিনি কী করবেন, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে।
এ বিষয়ে বিবিসির নিউজ আওয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেফ্রি ফেল্ডম্যান। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, রাজত্ব রক্ষা করাই তাঁর (আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি) প্রথম লক্ষ্য। তাই রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে যদি তাঁকে কিছু ছাড়ও দিতে হয়…যেমন যাদের তিনি শয়তান বলে বর্ণনা করেন সেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যদি আলোচনায় বসতে হয়, তিনি তা করতে প্রস্তুত থাকবেন বলে আমার মনে হয়।’
‘তবে খামেনি তাঁর বর্তমান অবস্থানে অবিচল থাকতেও পারেন’, বলেন ফেল্ডম্যান। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ ইরানকে পারমাণবিক বোমা অর্জনের প্রচেষ্টা আরও জোরালো করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করা হলে সংঘাতের শেষ হবে ও পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানো যাবে।
এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘ইরান দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ইরান “চিরস্থায়ী যুদ্ধ” চায় ও ইসরায়েলকে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে এসেছে। ইসরায়েল এই আগ্রাসন ঠেকাচ্ছে এবং এটা ঠেকাতে হলে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে।’