বিচারিক ও প্রশাসনিক ফোরামের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে নির্জন কারাবাসে (কনডেমড সেল) রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ২৫ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত সোমবার পর্যবেক্ষণ, ঘোষণা, নির্দেশনাসহ ওই রায় দিয়েছিলেন।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
বিচারিক ও প্রশাসনিক ফোরামের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত আসামিকে কনডেমড সেলে রাখার বৈধতা নিয়ে ২০২১ সালে রিটটি হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হয়ে কনডেমড সেলে থাকা তিন আসামি রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল দেন। এই রুল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে অন্য বন্দীদের মতোই দেখতে হবে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বা অন্য বন্দীদের নিরাপত্তার স্বার্থে, সংক্রামক রোগ, স্বাস্থ্যগত বিষয়সহ ব্যতিক্রম পরিস্থিতির কারণে তাঁকে কনডেমড সেলে রাখতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীর বক্তব্য শুনতে হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জামিনের নজির দেখা যায় না উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী জামিন আবেদন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগের জামিন আবেদন গ্রহণ করা উচিত।