কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে বাজেট করিনি: অর্থ উপদেষ্টা
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 03-06-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে বাজেট করিনি। উচ্চ মূল্যস্ফীতি; ব্যাংক ও জ্বালানি খাতের সমস্যা এবং রাজস্ব আদায়ের খারাপ পরিস্থিতি—এসব কিছুর মধ্যেই বাজেট করতে হয়েছে। প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার বাড়ানো হয়নি।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পরদিন আজ মঙ্গলবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

 

 

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ ছাড়া সবাই কথা বলেছেন।

দর্শনার্থীর কাতারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

বেলা ৩টায় শুরু এ সংবাদ সম্মেলনের প্রথম ৩০ মিনিট কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব, যা চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। সাধারণত এ সংবাদ সম্মেলন দুই ঘণ্টা ধরে চলে। আজ দেড় ঘণ্টার মাথায় সংবাদ সম্মেলন শেষ করে দেওয়া হয়। ফলে অনেক সাংবাদিক প্রশ্ন করার সুযোগ পাননি।

 

অর্থ উপদেষ্টা শুরুতেই বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নেই। তাই জাতির সামনে বাজেট উপস্থাপন করেছি। কারণ, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তিনি বলেন, ‘যে সময়ে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি, তা এক কঠিন সময়। আমরা ক্ষমতা নিইনি, দায়িত্ব নিয়েছি। তা–ও দেশের এক ক্রান্তিলগ্নে।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকেই বলেছেন দেশ আইসিইউতে ছিল, খাদের কিনারে চলে আসছিল, বিশেষ করে আর্থিক ব্যবস্থাপনায়। সে সময় যদি আমরা দায়িত্ব না নিতাম, তাহলে কী যে হতো...! দেশের অবস্থা আরও খারাপ হতো। সবাই মিলে দেশটাকে এখন একটা স্থিতিশীল অবস্থান নিয়ে আসতে পেরেছি।’

সম্পদ সীমিত, চাহিদা অনেক বেশি। বাইরে থেকে সম্পদ আনা, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, পুঁজিবাজারের অবস্থা, ব্যাংকের অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি—সব মিলিয়ে একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল। এর ভেতরেই কাজ করতে হচ্ছে। এসব কথা জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘যে সংস্কারগুলো আমরা হাতে নিয়েছি, সেগুলো চলমান। যতটুকু পারি করব। তবে আমরা একটা পদচিহ্ন রেখে যাব। আশা করছি, পরে যাঁরা আসবেন, তাঁরা বাকিগুলো বাস্তবায়ন করবেন।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনারা এত দিন তো প্রবৃদ্ধির বয়ান শুনেছেন, তার সুবিধা কে পেয়েছে? সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আমরা মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হয়, ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে চালিয়ে যেতে পারে, সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাজেট সাজিয়েছি।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং এনবিআর সংস্কার করছি। প্রাথমিকভাবে মনে করি জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব বাজেট হয়েছে। অনেকে বলেছেন আমরা আগের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি। আসলে চট করে বিপ্লবী একটা বাজেট দিয়ে দেব, দারুণ একটা রাজস্ব আয় করে ফেলব, তা সম্ভব নয়। আমরা কিছু পদাঙ্ক অনুসরণ করে সামনে এগোচ্ছি।’

শেয়ার করুন