আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুচলেকা দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন।
আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শুচিতা শরমিন এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও জিডি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, মুচলেকার মাধ্যমে এসব মামলা ও জিডি প্রত্যাহার করা হবে। সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মহসিন উদ্দীনকে অব্যাহতির বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে ও ব্যবস্থা নিতে একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ সময় সম্প্রতি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন উপাচার্য। তিনি জানান, জেবুন্নেছা চিকিৎসা সহায়তার আবেদন করলেও তা না পাওয়ার অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২৭ এপ্রিল রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁরা রেজিস্ট্রারকে ‘ফ্যাসিস্টদের দোসর’ দাবি করে কুশপুত্তলিকা দাহ করেন ও রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা লাগান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কে এম সানোয়ার পারভেজ ১০ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জিডি করেন। এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটক ভাঙচুর করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের চার বছরের চাকরির মেয়াদ শেষ হয় ৩০ জানুয়ারি। এরপর উপাচার্য তাঁকে দায়িত্বে রাখার নির্দেশ দেন এবং পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এরপর শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মনিরুলকে অপসারণের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ৮৮তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় মনিরুল ইসলামকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।