রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার সদ্য বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহানের অদম্য প্রচেষ্টায় নির্মিত হলো দৃষ্টিনন্দন গ্রন্থকুটির নামে একটি নান্দনিক লাইব্রেরি।
উপজেলা পরিষদ মুল ভবনের এর সামনেই শৈল্পিক কারুকার্য সম্বলিত এই ট্রি-হাউস লাইব্রেরি” গ্রন্থকুটির “মুগ্ধ করবে যে কাউকেই। গত সোমবার গ্রন্থকুটিরে গিয়ে দেখা যায়, সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব ম্যাটেরিয়ালস দিয়ে এই লাইব্রেরীটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বাঁশ, কাঠ, বেত, গাছের ব্যবহার করে প্রস্তুত করা হয়েছে এই গ্রন্থকুটির। তাছাড়া অপূর্ব পেইন্টিংস এর মাধ্যমে কাপ্তাইয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বিশেষ করে কাপ্তাই লেক, কর্ণফুলী নদী, রিজার্ভ ফরেস্ট,পাহাড়কে ফুটিয়ে তোলার চেস্টা করা হয়েছে এই লাইব্রেরির ভিতরে ও বাইরে।
এবিষয়ে কাপ্তাই উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, কাপ্তাই উপজেলায় সবার জন্য উন্মুক্ত কোনো লাইব্রেরি নেই। বর্তমানে যুবসমাজকে বই পড়ার প্রতি আকর্ষন করে বই পড়াকে আনন্দদায়ক করতে মুলত এই উদ্যোগ। এটি হলো একটা ট্রি হাউস লাইব্রেরি। ইট, পাথর, কংক্রিট ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ ইকো ম্যাটেরিয়ালস এর দিয়ে যা তৈরি করা হয়েছে। এই গ্রন্থকুঠির নির্মাণে
বাঁশ, কাঠ, বেত, গাছ ব্যবহার করা হয়েছে।
এর সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হচ্ছে মেহগনি গাছের গুঁড়ি দিয়ে টেবিল, আর নারকেল গাছের গুঁড়ি ব্যবহার করে বসার টুল ও টেবিলের রূপ দেয়া হয়েছে। এই গ্রন্থকুঠিরে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই রয়েছে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, দেশ, বিজ্ঞানভিত্তিক, ধর্মীয়, শিশুতোষ, আইন, গল্প, উপন্যাস, কবিতা সহ নানান বই আছে এখানে। এই গ্রন্থকুঠির নির্মাণে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতায় এই গ্রন্থকুঠির নির্মাণ সম্ভব হয়েছে বলে সাবেক ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান।
কাপ্তাই উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী জানান, একসময় আমরা ছাত্র জীবনে অবসর সময় পেলে গল্পের বই, ভ্রমন কাহিনী সহ নানা ধরনের বই পড়তাম। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্থকের বাহিরে বই পড়ার চেয়ে মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে, তাই এই ধরনের লাইব্রেরী নির্মাণের ফলে তাদেরকে বইমুখী করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কর্ণফুলি সরকারি কলেজ এর বাংলা বিভাগের প্রভাষক পলাশ মুৎসুদ্দী জানান, বাংলা সাহিত্যের অপুরণ ভান্ডার পড়ে শেষ করে যাবে না কখনো। ক্লাসের পড়ার বাহিরে যতবেশি বই শিক্ষার্থীরা পড়বে ততই তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। তাই উপজেলা সদরে এই ধরনের গ্রন্থকুটির নির্মাণ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
কর্ণফুলী সরকারি কলেজ এর শিক্ষার্থী ঋতুপর্ণা বিশ্বাস, মাসাচিং মারমা, লিজা আক্তার সহ অনেকে জানান, এই লাইব্রেরী নির্মাণে আমরা অবসর সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়তে পারবো।